হাওজা নিউজ এজেন্সি: প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিপ্লবের পূর্বাবস্থা থেকেই ইমাম খোমেনি (রহ.) মুসলিম সমাজের ঐক্য নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত ছিলেন। ইসলামী বিপ্লবের বিজয় ও ইমামের দিকনির্দেশনা বিশ্ব ইসলামী ঐক্যের গুরুত্বকে আরও বেশি স্পষ্ট করেছে।
ঐক্যের জন্য চার ধাপের কৌশল
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ আলী ফুলাদি বলেন: ইমাম খোমেনি (রহ.) ঐক্যকে একটি কৌশলগত রাজনৈতিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখিয়েছেন এবং তা চারটি ধাপে বাস্তবায়নের রূপরেখা দিয়েছেন:
▫️ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা,
▫️রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা,
▫️মুসলিম রাজনৈতিক ঐক্যের পথে অগ্রগতির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ব্যবহার,
▫️শেষ পর্যন্ত একটি শক্তিশালী ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা।
তিনি বলেন, ইমামের এই দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে কেবল বিপ্লবের নেতা হিসেবেই নয়, বরং বিশ্ব ইসলামী জাগরণের অন্যতম প্রেরণাদাতা হিসেবে পরিচিত করেছে। জিহাদে মুকাওয়ামাহ ও স্বাধীনতাকামী বহু আন্দোলন আজও তাঁর চিন্তা ও বিপ্লব থেকে অনুপ্রাণিত।
সুন্নি-শিয়া অভিন্নতা
ফুলাদি মনে করিয়ে দেন, সুন্নি ও শিয়ার মধ্যে মৌলিক অভিন্নতা ঐক্যের জন্য সবচেয়ে বড় ভিত্তি:
▫️সবার রব এক,
▫️সবার নবী এক,
▫️সবার কিবলা এক,
▫️সবার কিতাব কুরআন,
▫️সবাই রমজানে রোজা রাখে, নামাজ পড়ে, যাকাত দেয়।
অতএব, পার্থক্য কেবল কিছু গৌণ ফিকহি বিষয়ে, যা বিভেদ সৃষ্টি করার অজুহাত হওয়া উচিত নয়।
বিভাজন দুর্বলতার কারণ
মহিলা হাওযার গবেষক নার্জেস শকরজাদা বলেন:
ইমাম খোমেনি (রহ.) স্পষ্টভাবে বলেছেন— ঐক্য মুসলিমদের শক্তির উৎস, আর বিভাজন দ্বীনের ভিত দুর্বল করে।
তিনি ইমামের সতর্কবাণী উদ্ধৃত করেন: “মুসলিম দেশগুলোর বিভেদ হয় হয়তো শাসকদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে, নয়তো তাদের অজ্ঞতার কারণে।”
ইমামের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য: “ইসলামে সুন্নি-শিয়া, কুর্দ-ফারস – এসব বিভাজনের বিষয় নয়; আমরা সবাই ভাই। কেউ শিয়া, কেউ সুন্নি, কেউ হানাফি, কেউ হানবলি হতে পারে, কিন্তু যদি সবাই ইসলামের খেদমত করতে চায়, তবে এসব আলোচনা বিভেদ বাড়ানোর কারণ হওয়া উচিত নয়।”
তিনি আরও বলেন: “শিয়া ও সুন্নি ভাইদের অবশ্যই মতভেদ এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ আজকের বিভেদ কেবল তাদেরই উপকারে আসে, যারা না শিয়াতে বিশ্বাস করে, না সুন্নিতে। তারা ইসলাম দুর্বল করতে চায় এবং এজন্য আমাদের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি করে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা সবাই মুসলিম, সবাই কুরআন ও তাওহীদের অনুসারী। আমাদের কুরআন ও তাওহীদের জন্য পরিশ্রম করতে হবে।”
আপনার কমেন্ট